”সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল কক্ষে ড.ইউনূস অবস্থান করেন, যার দৈনিক ভাড়া ৬,০৪৫ পাউন্ড বা ১০ লক্ষ টাকা। কেবল তার কক্ষেরই বিল আসে ৪০ লক্ষ টাকা বা ২৪,১৮০ পাউন্ড। তাছাড়া, সরকার প্রধান হিসেবে দেশের ফ্ল্যাগ ক্যারিয়ার বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমণ না করে গেলেন আমিরাতের এয়ারলাইন দিয়ে। অথচ লন্ডনে বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু আছে।”
চারদিনের সফরে বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
প্রধান উপদেষ্টার এই লন্ডন সফর নানা কারণে সমালোচিত হচ্ছে। অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান বাতিল, পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকায় নাম না থাকা, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দেখা না পাওয়া, হোটেলের বাইরে জড়ো হয়ে আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীর ইউনূসবিরোধী বিক্ষোভ ইত্যাদি কারণে বেশ আলোচনায় তাঁর এই সফর।

এমনকি প্রশ্ন উঠেছে এই সফরের ব্যয় নিয়েও। আল-জাজিরার প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের শুক্রবার (১৩ জুন) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাসে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর প্রশ্ন- ড. ইউনূসের এত ব্যয়বহুল সফর থেকে বাংলাদেশ কী পেল?
হোটেলের একটি বিলের কপি সংযুক্ত করে জুলকারনাইন সায়ের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনূস ও তাঁর সফর দল গত ৯ জুন ২০২৫ যুক্তরাজ্য সফরে আসেন। তাঁদের অবস্থানের জন্যে লন্ডন শহরের অন্যতম ব্যয়বহুল দ্যা হোটেল ডরচেস্টারে ৪ রাতের জন্য ৩৭টি রুম রিজার্ভ করা হয়। তাঁদের হোটেল বিলের একটি কপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৩৯ জনের সফরদল ৪ রাত অবস্থানের জন্যে ব্যয় করেছে ২,১০,৩২৫ ব্রিটিশ পাউন্ড বা প্রায় ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা (১ পাউন্ড = ১৬৬ টাকা হিসেবে)। সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল কক্ষ যেখানে অবস্থান করেন প্রধান উপদেষ্টা, সেটি দৈনিক ৬০৪৫ পাউন্ড বা ১০ লক্ষ টাকায় ভাড়া করা হয়। কেবল তার কক্ষেরই বিল আসে ৪০ লক্ষ টাকা বা ২৪,১৮০ পাউন্ড।’
সায়ের লিখেন, ‘দেশের সরকার প্রধান অবশ্যই বিদেশ সফরে যেতে পারেন, তার নিরাপত্তা ও মর্যাদা বিবেচনায় যে কোনো শীর্ষ হোটেলেই তিনি ও তাঁর দল অবস্থান করতে পারেন। কিন্তু তাঁর এই সফরে বাংলাদেশ কি পেলো বা কিভাবে লাভবান হলো সেটা প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এখানে দ্বিপাক্ষিক কোনো বৈঠকের জন্য আসেননি, সেটা তো নিশ্চিত। ব্রিটিশ রাজার কাছ থেকে ব্যক্তিগত পুরস্কার গ্রহণ করেছেন কেবল। আর আজ বিএনপির শীর্ষ নেতা জনাব তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাত করেছেন। কোনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে বলেও জানা যায়নি। এছাড়াও, লন্ডনে বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি ফ্লাইট থাকা সত্বেও তিনি ও তাঁর দল ভ্রমণ করেছেন এমিরেইটস এয়ারে। এমিরেইটসের ফার্স্ট ক্লাস ও বিজনেস ক্লাসের ভাড়াও বিমানের তুলনায় বেশি। আর সরকার প্রধান হিসেবে তিনি দেশের ফ্ল্যাগ ক্যারিয়ারে ভ্রমণ করবেন এমনটাই তো কাম্য?’