গতকাল পালিত হল দীপাবলি উৎসব যা এখন আর শুধু ভারতের উৎসব নয়, ভারতীয় প্রবাসীদের হাত ধরে এটি এখন বিশ্বব্যাপী আলোর উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশে এখন জাঁকজমকের সঙ্গে এই উৎসব পালিত হয় এবং অনেক দেশেই একে সরকারি ছুটির মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। এই দেশগুলোর বহু শহরে ভারতীয়দের পাশাপাশি স্থানীয়রাও প্রদীপ জ্বালিয়ে, মিষ্টি বিতরণ করে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আনন্দ করেন।
দীপাবলির গুরুত্বের প্রতীক হিসেবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, পেনসিলভেনিয়া এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মতো রাজ্যগুলো দীপাবলিকে সরকারি বা স্কুল ছুটির মর্যাদা দিয়েছে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াসহ অনেক দেশে এই দিনে সরকারি ছুটি থাকে। এটি প্রমাণ করে যে, এই উৎসব এখন আন্তর্জাতিকভাবে একটি প্রধান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

উৎসবের এই সময়টি ভারতীয় অর্থনীতির জন্য এক বিশাল ‘বুস্টার শট’ হিসেবে কাজ করে। উৎসবের এই বিশ্বজনীনতা ভারতীয় অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলে। কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের (CAIT) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দিওয়ালির সময় শুধু ভারতেই প্রায় ৪.২৫ লক্ষ কোটি টাকা বা ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য বিক্রি হয় উপহার এবং খুচরো ব্যবসা বাবদ। দেশীয় পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি এবং উপহার সামগ্রীর ব্যাপক আদান-প্রদান এই ব্যবসাকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে।
দীপাবলির মূল আকর্ষণই হল উপহার সামগ্রীর আদান-প্রদান। পোশাক, গয়না, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, বাড়ির সাজসজ্জার জিনিসপত্র, এবং বিশেষ মিষ্টির চাহিদা এই সময় আকাশছোঁয়া থাকে। দেশীয় পণ্য এবং স্থানীয় কারিগরদের তৈরি প্রদীপ ও মাটির সামগ্রীর প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ায় ছোট ও মাঝারি ব্যবসাগুলো প্রচুর লাভবান হচ্ছে। এই সময়ে ভ্রমণ, হোটেল এবং আর্থিক খাতেও উল্লেখযোগ্য গতি আসে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে।
সব মিলিয়ে, দীপাবলি কেবল অন্ধকারের ওপর আলোর জয়ের বার্তা বহন করে না, বরং বিশ্বজুড়ে ভারতীয় সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।




