ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরব শিল্পীরা

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ঘরে ঢুকে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। পিছিয়ে নেই শোবিজ তারকারাও। এমন ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন নির্মাতা, অভিনেতা, শিল্পী থেকে শুরু করে অনেকে।

অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন প্রতিবাদ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘ধর্ষণ একটি ভয়াবহ অপরাধ। কিন্তু এই দেশে, এটি দীর্ঘদিন ধরে স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হচ্ছে। মানুষ কেবল তখনই এটি নিয়ে কথা বলে, যখন একটি মর্মান্তিক ঘটনা ভাইরাল হয়, একটি ভিডিও ক্লিপ, একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট। তারপর হঠাৎ করে সবাই খেপে যায়। কিন্তু তা স্বল্প সময়ের জন্য। দ্রুতই, মানুষ এগিয়ে যায়, ভুলে যায় সব। কারণ, প্রতিদিন একটি নতুন নাটক, নতুন কেলেঙ্কারির জন্ম নেয়।…আমরা ধর্ষণকে একটি সংবাদ হিসেবে বিবেচনা করি, সংকট হিসেবে নয়। আরও খারাপ কথা, কিছু লোক এসব অপরাধের ঘটনা রেকর্ড করে, শেয়ার করে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিনোদন হিসেবে ছড়িয়ে দেয়। তারাও কিন্তু নির্দোষ নয়। তারা অপরাধের অংশ। তাদেরও শাস্তি পেতে হবে। আমার মনটা ভেঙে গেছে, খুব রেগে আছি, এবং হ্যাঁ, আমি ভয়েও আছি। কারণ, আমি একজন নারী এবং আমি এ দেশে নিরাপদ বোধ করি না। না বাস্তবিক জীবনে, না ভার্চুয়াল জীবনে।’

অপরাধীর ফাঁসির দাবি জানিয়ে অভিনেতা মিশা সওদাগর লিখেছেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষ শান্তিতে থাকুক। প্রতিটি নারী নিরাপদে থাকুক। প্রতিটি অন্যায়ের ন্যায়বিচার হোক। প্রতিটি ধর্ষকের ফাঁসি হোক। মুরাদনগরে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের তীব্র ঘৃণা এবং নিন্দা জানাচ্ছি। ধর্ষকের ফাঁসির দাবি করছি।’

অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘মানুষ আর মানুষ নেই। পৃথিবী শেষ হয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই মানুষ আর মানুষ থাকবে না।’

অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া লিখেছেন, ‘স্টপ রেপ।’

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি লিখেছেন, ‘ধর্ষণকে না বলুন। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।…ধর্ষণ বন্ধ করুন।’

তমা মির্জা লিখেছেন, ‘মুরাদনগর, কুমিল্লা! বীভৎসতা! লজ্জা…!’

অভিনেতা আরশ খান লিখেছেন, ‘কাপুরুষত্ব যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছায়, তখন তা কুপুরুষত্বে রূপ নেয়। জন্ম-পরিচয়হীন না হলে একজন নারীর সঙ্গে এমন করা সম্ভব না।’

অভিনেতা জিয়াউল রোশান লিখেছেন, ‘কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনায় ধর্ষকদের একটাই শাস্তি চাই। জনসম্মুখে ফাঁসি। তারা কোন দল করে, কোন ধর্মের—সেটা জানা দরকার নাই, জানতেও চাই না। জাস্ট জনসম্মুখে ফাঁসি চাই।’

কণ্ঠশিল্পী সিঁথি সাহা লিখেছেন, ‘কোন দেশে আছি? এ কী দেখলাম? ঘেন্না ঘেন্না ঘেন্না…!’

অভিনেতা জয় চৌধুরী লিখেছেন, ‘কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীর সঙ্গে যা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। যিনি ধর্ষণ করেছেন এবং যিনি পরবর্তীতে ভিডিও করে পাবলিক করেছেন, উভয়ের বিচার চাই।’

নির্মাতা নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাটা যেন একটা কৌতুক, আবার কষ্টের ট্র্যাজেডি। মনে হয়, পুরো দেশটা যেন এক বিশাল পরীক্ষাগার, আর সেই পরীক্ষার দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছে এমন কারও হাতে, যার জ্ঞান নেই, দায়িত্ববোধ নেই। ঠিক যেন বান্দরের হাতে লাঠি।…বাংলাদেশ এখন ঠিক সেই অবস্থায়, যেখানে বান্দরের হাতে লাঠি, আর দেশটা কেবল সহ্য করে যাচ্ছে।’

সংগীতশিল্পী লুৎফর হাসান লিখেছেন, ‘কোনো অপরাধী গ্রেপ্তার হলেই আমরা খুশি হই। আমরা থেমে যাই। আমাদের থেমে যাওয়ার পরই শুরু হয় আসল প্রক্রিয়া। আলগোছে অপরাধী মুক্ত হয়। বিদেশে পালিয়ে যায়। দেশে জায়গা বদল করে।…ইতিহাস থেকে উঠে যায় অপরাধীর শাস্তি কার্যকরের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।’

Tags :

Entertainment Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025