যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাত শিবিরের প্রবেশাধিকার ছিলনা, যেই বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় দাঁড়িয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, প্রগতিশীলতার পক্ষে, সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি আজ নিয়ন্ত্রন করে ছাত্রশিবির। ডাকসু নির্বাচন, যেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে জয়ী হয়েছেন মতিয়া চৌধুরীর মতো মহিয়সীরা, সেই ডাকসুতে আজ সাদিক কায়েম নারী অধিকারের কথা বলে ভোট চায়। এর থেকে দুর্ভাগ্য, এর থেকে বেদনার আর কী হতে পারে বলুন?
এবারের ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেলের নাম ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থি জোট। শিবির না এইসব নাম খুব ভালোবাসে। ‘শিক্ষার্থি জোট’, ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থি’, ‘নিরপেক্ষ ছাত্রছাত্রী’ এইসব। আর তাদের সবচেয়ে প্রিয় ক্যামোফ্লেজের নাম কী বলুন তো? ঠিকই বলেছেন, ছাত্রলীগ। আচ্ছা যাই হোক।
এবারের ডাকসু নির্বাচনে শিবির তার ছদ্মবেশের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আরো বিভিন্নভাবে এসেছে।
আজকে এই লেখাটি লেখার আগে ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতাকারীদের বেশ কিছু নির্বাচনী প্রচারণা দেখলাম। দেখে মনে হলো এইসবের পেছনে বেশ বড় অংকের অর্থ প্রয়োজন, এই অর্থ আসছে কোথথেকে? জামাত শিবিরের তো টাকার অভাব নেই। তাদের সাথে দেখা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চিফ অফ স্টাফ অপেক্ষা করে থাকেন, তাদের আমির ক্যানাডা যাবেন বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় দূতাবাসে চিঠি লেখে।
দেখলাম বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থি সংসদ বা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, অর্থের উৎস সম্পর্কে ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের জানালেন তারা নাকি তাদের টিউশনির টাকা খরচ করে নির্বাচন করছেন। এখন এই টিউশনির টাকা দিয়ে চলা নামের বস্তুটা কিন্তু আমরা আগে শুনেছি। টিউশনির টাকা দিয়ে চলা ছাত্র সমন্বয়কেরা এক বছরের মধ্যে নতুন বাড়ি, গাড়ি, করেছেন। তাদের এপিএসেরই শত কোটি টাকার মালিক হওয়া কি আমরা এরই মধ্যে শুনিনি?
এই টিউশনির টাকা মানে হলো, এখানে ডিপ স্টেইটের কোন দেশ টাকা ঢালছে, মানে এখানে টেন্ডারবাজি বা অন্য কোন আর্থিক দুর্নীতি হচ্ছে। আর এই আব্দুল কাদেরকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে সমর্থন জানিয়েছে আরেক টিউশনি করে চলা দল, মুহম্মদ ইউনুসের কিশোর গ্যাং, জামাতের সি-টিম এনসিপি। এনসিপির মব ভায়োলেন্স, আর্থিক দুর্নীতির কথা আবার বলে আপনাদের সময় নষ্ট করবোনা, আপনারা সবই জানেন ও বোঝেন। আমি যেটা বুঝলাম, জামাত শিবির আসলে যেমন এনসিপির মাদার অর্গানাইজেশন, এইসব বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থি সংসদ আর গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্রার্থীরা আসলে শিবিরেরই প্রার্থী। শিবির এবার আঁটঘাট বেধে নেমেছে। যেকোন মূল্যে তারা ডাকসু হস্তগত করতে চায়।
আরেকজন ইন্টারেস্টিং প্রার্থী হলেন প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের জিএস প্রার্থী তথাকথিত প্রগতিশীলদের পোস্টারবয় মেঘমল্লার বসু। তিনি কদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জামাত বিরোধী স্লোগান দিয়ে বেশ একটু নাম কামিয়েছিলেন। কিন্তু তার প্রগতিশীল ভক্তরা প্রায়ই ভুলে যান, এই মেঘমল্লার বসুই জামাত শিবিরের সাথে বিভিন্ন আন্দোলন করেছেন। তাদের মিত্র হয়ে কাজ করেছেন। এই সেই লোক যে নিজের প্রয়োজনে জামাতের সহযোগী হতে দ্বিধা করেননা, এর পক্ষে আপনারা দাঁড়ান কীকরে? মেঘমল্লার বসু সম্পর্কে যে বিষয়টা আমার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মনে হয়, পাঁচ অগাস্ট ২০২৪ থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যে ভয়াবহ নির্যাতন শুরু হয়েছে, মেঘমল্লার বসু তখন একে বলেছিলেন, এগুলো নাকি ভারতের প্রপাগাণ্ডা। যেই কথা জামাত শিবির বলে আসছে, মুহম্মদ ইউনূস বলে আসছেন, সেই একই কথার প্রতিধ্বনি করেছিলেন মেঘমল্লার। মেঘমল্লারের মতো মানুষদের জন্য হিন্দুদের ওপর হওয়া নির্যাতন এই সরকার গণহত্যায় রুপ দিতে পেরেছে। এই লোককে বিশ্বাস হয় আপনাদের? আর কদিন আগে উনি আরেক আশ্চর্য কথা বললেন, তিনি অসুস্থ, প্রচারণা চালাতে পারেননি তাই উনাকে ভোট দেয়া না দেয়া বড় বিষয় না বা এরকম কিছু একটা। এরকম আমরা দেখেছি আগে। আর্থিক বা অন্য কোন সুবিধা পাবার আশায় প্রতিপক্ষকে সামনে এগিয়ে দেয়া। বলছিনা মেঘমল্লারও এমন করেছেন। শুধু আপনাদের একটু মনে করিয়ে দিলাম আরকী।
নিজেকে সারাক্ষণ নিরপরাধ প্রমাণ করতে ব্যস্ত আরেক প্রার্থী উমামা ফাতেমা। জুলাই ষড়যন্ত্রের সময় যিনি ছাত্রশিবিরের সবচেয়ে বড় মিত্রদের একজন ছিলেন বা এখনো আছেন। যার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার মানে হলো জামাত শিবিরের সহযোগী হওয়া আর আওয়ামীলীগ এলে আমাদের কী হবে বলে মানুষের সহানুভূতি কুড়ানো। তাকে যদি আপনারা ছাত্র সংসদের দায়িত্ব দিতে চান, আমার কিছু বলার নেই। তবে তার ম্যানিফেস্টো দেখে আমার আসলে বিরক্ত হতে গিয়ে হাসি চলে এলো। তিনি নাকি নারীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলবেন। এই উমামা ফাতেমা এতোই পেটি যে তিনি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করেছিলেন যে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কেন জাতিসংঘে কাজ করছেন। পুতুলের মতো একজন আত্মনির্ভর নারীর যাত্রা যিনি থামিয়ে দিতে চান তিনি নারীবান্ধব ক্যাম্পাসের জন্য কাজ করবেন! প্লিজ। ঘোড়ায় শুনলে হাসবে।
এবারের নির্বাচনে চল্লিশ হাজার ভোটের প্রায় ৪৮ শতাংস নারী ভোটার। তাই সব দল সব প্রার্থীই নারী কার্ডটা খুব খেলছেন। আপনারা উমামা না, ছাত্রদল বা শিবিরে প্রার্থীদের নারী সম্পর্কিত প্রতিশ্রুতিগুলো দেখুন, মনে হবে, আমেরিকার দূতাবসের তৈরী করে দেয়া। এদের সাথে আমেরিকান, পাকিস্তানী, ফঁরাসী দূতাবাসের প্রেম নিয়ে কিছু বলছিনা। যাই হোক, ছাত্রীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি, নারীশিক্ষার্থিদের সন্তানদের জন্য ডে কেয়ার, নারীরা যাতে দেরিতে হলে আসতে পারেন – কী নেই সেখানে। এতো নিখুঁত, এতো পলিটিক্যালি কারেক্ট। কিন্তু কেউ কি একবার তাদের প্রশ্ন করেছেন, নারী ভোট টানার জন্য এতোকিছু কিন্তু নারী প্রার্থী এতো কম কেন? ডাকসুতে এবার নির্বাচন হবে ২৮টি পদে, প্রার্থী ৪৭১ জন। তাঁদের মধ্যে নারী প্রার্থী সব মিলিয়ে ৬২ জন, যা মোট প্রার্থীর মাত্র ১৩ শতাংশ। ভিপি পদে মোট প্রার্থী ৪৫ জন। এর মধ্যে নারী ৫ জন। সাধারণ সম্পাদক বা জিএস পদে প্রার্থী ১৯ জন, সেখানে নারী প্রার্থী মাত্র ১ জন। আপনারা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থি আছেন, তাদের কাছে একে স্বাভাবিক মনে হয়? তথাকথিত জুলাই আন্দোলনেতো মেয়েরা ছিল সবার সামনে। তারপর কোথায় গেল তারা? নারী প্রার্থী এতো কম কেন জানেন, কারণ গত জুলাই ষড়যন্ত্রের পর থেকে নারী অধিকার বলে কিছু নেই, যা আছে তা হলো নারী নিপীড়ন। তাই নারীরা যেমন নির্বাচনে আসতে ভয় পান, দলগুলো তেমনি দাবিয়ে রাখতে চায় নারীকে। এই জন্যেই আলী হুসেন নামের শিবিরের সদস্য একজন নারী প্রার্থীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের পদযাত্রা করার কথা বলতে পারে।
এবারের ডাকসু নির্বাচন জামাত শিবিরের জন্য একটা এসিড টেস্ট এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় নির্বাচনের আগে শুধু জনপ্রিয়তা যাচাই নয়, তারা ঢাকা সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের নিয়ন্ত্রন নিয়ে চায়। তারা জানে বাংলাদেশের প্রাণ হলো তার ছাত্ররা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়েছে ছাত্ররা, সবার আগে গুলি, কামানের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থিরা। এদেরকে নিয়ন্ত্রন করতে চায় জামাত শিবির। আগামি নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বা কাছাকাছি বয়েসীদের প্রায় ৩৩ ভাগ ভোট আছে। ডাকসুতে জিতে আসতে পারলে সেই ৩৩ ভাগকে প্ররোচিত করা সহজ হবে অনেক। জামাতের লক্ষ্য হলো তাই করা। আপনারা খেয়াল করে দেখুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল শিক্ষক, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শিক্ষকদের কীকরে মামলা দিয়ে, জেলে ভরে কিংবা বরখাস্ত করে কীভাবে অদৃশ্য করে রাখা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জামাত শিবিরের হাতে চলে গেছে, এখন ছাত্র সংসদ গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের বাইরে আর কিছু থাকবেনা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র যারা আছেন, আপনাদের একটা প্রশ্ন করি। আপনারা কি জামাত শিবিরের এই ম্যাটিক্যুলাস প্ল্যানের অংশ হতে চান? জামাত শিবিরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রার্থী মেয়েটি, জুমা না কী যেন নাম, যে কদিন আগে চিৎকার চেঁচামেচি করে বললো, রাজাকারদের নাকি ফাঁসি দেয়া হয়েছিল ভারতের ষড়যন্ত্রে। সেই মেয়েটি বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ভোটাররা কি জানেন, শিবিরের আসল নাম, ইসলামি ছাত্রসংঘ যা ১৯৭১ সালে দুই লক্ষ নারীকে ধর্ষণের জন্য পাকিস্তানি/ বাহিনীর অন্যতম সহযোগী ছিল? ইসলামি ছাত্রসংঘের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তুলে নিয়ে আসতো নারীদের, যার মধে অনেকেই ছিল আপনাদের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া। ছাত্রসংঘের ছেলেরা ধরে নিয়ে আসতো তাদের নারী সহপাঠিদের, তারপর তুলে দিতো পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে। এই কদিন আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী হেনস্থাকারী কর্মীকে মব করে ফুলের মালা দিয়ে জেলে থেকে ছুটিয়ে নিয়ে এসেছে শিবিরের সদস্যরা। আপনারা সত্যি বিশ্বাস করেন, এরা কাজ করবে নারী শিক্ষার্থিদের জন্য? ক্ষমতা পাওয়া মাত্র এরা বন্দী করবে আপনাদের, নির্যাতন করবে আপনাদের। শিক্ষা, পেশা, স্বাভাবিক জীবন সবকিছুকে জঙ্গীবাদের মোড়কে মোড়াবে তারা। এরপরেও কি আপনারা ভোট দিতে চান তাদের?
সর্বমিত্র চাকমা নামের যেই আদিবাসী ছাত্রটি শিবিরের প্রার্থী হয়ে লড়ছেন, তিনি কি জানেন জামাত শিবিরের সহোদর জিয়াউর রহমান কীকরে সেটেলার পাঠিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে সারাজীবনের জন্য আদিবাসীদের জন্য নরক বানিয়ে দিয়ে গেছেন? আদিবাসী ভোটারেরা কি আবার তাদের ভোট দিতে চান?
নারী-পুরুষ- কিংবা আপনারা যেই ধর্মের, রাজনীতির বিশ্বাসের হননা কেন, ডাকসুর নীতিমালায় যেখানে আছে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কেউ ডাকসু নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেনা, সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের অস্তিত্ব অস্বীকার করা দলটি নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছে। আপনারা, অপরাজেয় বাংলার উত্তরাধীকারি আপনারা সেই দলটাকে জিততে দেবেন? এই সাদিক কায়েম, এই ফরহাদ এরা এতোই ধুর্ত, এতোই কদর্য যে এরা নিজেদের পরিচয়েও রাজনীতি করতোনা। করতো ছাত্রলীগের পরিচয়ে নিজেকে লুকিয়ে। ছাত্রলীগের কর্মী, নেতা হয়ে এরা সব রকমের সুবিধা নিয়েছে, সাধারণ ছাত্রদের অত্যাচার করেছে ছাত্রলীগ নামকে কলুষিত করে, আজ এরা যখন বলে, গণরুম কালচার বন্ধ করবে – আপনারা একে বিশ্বাস করেন? এরা তো গিরগিটি থেকেও বেশি রঙ বদলায়।
ভুলে যাবেন না, কী বিশাল-কী অহংকারের জায়গা আছে আপনাদের। আপনাদের শিক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন জাফর, জয়নাল, দীপালী, কাঞ্চনেরা। এই সেদিনও আপনাদের শিক্ষক এক হাতে সংবিধান নিয়ে কারাগারে গেছেন। আপনাদের পূর্বসুরীরা রক্ত দিয়েছে ৫২তে। যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার পদচারণা, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন পাকিস্তানের সামনে । ২৫শে মার্চ যেই কয়টা জায়গা পাকিস্তান আর্মি আক্রমন করেছিল, তাদের মধ্যে আপনাদের হলগুলো ছিল একটা। কারণ তারা জানতো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে হত্যা করতে পারলে বাংলাদেশের হৃদয়টিকে হত্যা করা যায়। এখনো তারা তাই জানে বলে আপনাদের নিয়ন্ত্রনে আনতে চায় যেকোন মূল্যে। আপনারা কি তাদের জিততে দেবেন?
রাউফুন বসুনিয়াকে নিয়ে লেখা একটা কবিতা আছে, তোমার মৃত্যুতে পৃথিবীর তিনভাগ জল হয়ে গেছে অশ্রু, রাজপথ হয়েছে সাহসী মিছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় শিক্ষার্থিরা, আপনারা রাজপথ হবেন নাকি ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ বীরাঙ্গনার দীর্ঘশ্বাস হবেন, সিদ্ধান্ত আপনার।