চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন ‘লন্ডনি বিল্ডিং’ এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয়পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলার কারণে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর এবং আরও শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করতেও দেখা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা প্রথমে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং হঠাৎ করে হামলা চালায়। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি, স্থানীয় কিছু যুবক বিনা উসকানিতে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়।
ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এর আগে গতকাল শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতেও ২ নম্বর গেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রাতভর চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। ওই ঘটনায়ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন, যাদের মধ্যে দুইজন শিক্ষকসহ বহু শিক্ষার্থী রয়েছেন।
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা জোরদার এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে। তবে এখনো পুরো এলাকা থমথমে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।
১৪৪ ধারা জারি
সংঘাতের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় আগামীকাল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রবিবার উপজেলা প্রশাসন এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা ও শান্তি শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেট বাজারের পূর্ব থেকে রেলগেট পর্যন্ত রাস্তার উভয়পাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হলো। এ অবস্থা রবিবার (৩১ আগস্ট) বেলা ২টা থেকে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত বলবত থাকবে। এই সময়ে এসব এলাকায় সব সভা সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার দেশীয় অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করা হলো। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হলো।