দেশে গ্যাসের চরম সংকটের কথা স্বীকার করলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এই সংকটে শিল্পকারখানাও যে বিপর্যস্ত, সেটাও উঠে এসেছে তার বক্তব্যে। সংকট নিরসনে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স নতুন কূপ অনুসন্ধানে নেমেছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার দুপুরে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া গ্যাসকূপ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের ফাওজুল কবির বলেন, দেশে গ্যাসের চরম সংকট চলছে, শিল্পকারখানা বিপর্যস্ত। তাই বাপেক্স এবার নতুনভাবে অনুসন্ধানে নেমেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বাপেক্স দুর্বল প্রতিষ্ঠান— এমন অভিযোগ আগেও এসেছে। তবে এবার তাদের কাজই প্রমাণ করবে তারা কতটা দক্ষ। কাঙ্ক্ষিত ফল না এলে খরচের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।
তিনি জানান, আরও কিছু জায়গায় টু-ডি ও থ্রি-ডি মডেলে অনুসন্ধান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
গ্যাস সংকট ছাড়াও জামালপুরে উন্নয়ন ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলে ফাওজুল কবির খান বলেন, শোনা যায়, জামালপুরে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নকাজ হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এসে দেখা গেল, কিছু ভবন ছাড়া দৃশ্যমান কিছু নেই। যদি সত্যিই এতো টাকা খরচ হতো, তাহলে পুরো জেলার চেহারাই পাল্টে যেত। এখন প্রশ্ন হলো, সেই টাকা গেল কোথায়? যারা করেছে, তারাও এখন নেই—জবাবদিহি করাও যাচ্ছে না।
সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা যেন কোনোভাবেই দুর্নীতিতে জড়িত না হন—এটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আগামী নির্বাচন স্মরণকালের সেরা নির্বাচন হবে। আপনারা যাকে খুশি তাকে ভোট দিন, তবে এমন কাউকে যেন না দেন, যাকে পরে খুঁজে পাওয়া যায় না, বা যিনি দায় নিতে চান না।
বর্তমানে বাপেক্স ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে তারতাপাড়া কূপে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। এখানে ১০.৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুত আছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৭.২ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনযোগ্য।
জ্বালানি সচিব মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এতে সরকারের প্রায় ১,১০০ কোটি টাকার সমমূল্যের এলএনজি আমদানি খরচ সাশ্রয় হবে।