থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাংবিধানিক আদালত সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। একটি চাঞ্চল্যকর ফাঁস হওয়া ফোনালাপের ভিত্তিতে নৈতিকতা লঙ্ঘনের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা থাই রাজনীতিতে গভীর অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
কেন বরখাস্ত হলেন পেতংতার্ন?
আদালতের ৯ জন বিচারকের মধ্যে ৭ জন পেতংতার্নকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার পক্ষে রায় দেন। যে ফোনালাপের জেরে এই রায়, তাতে পেতংতার্ন কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে থাইল্যান্ডের একজন সেনা কমান্ডারের সমালোচনা করছিলেন এবং তাকে “চাচা” বলে সম্বোধন করছিলেন। এই ঘটনা জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে, কারণ এর মাধ্যমে দেশের সামরিক বাহিনীর প্রতি অতিমাত্রায় নমনীয় আচরণ এবং জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে আপস করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিক্ষোভ
ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর থেকেই থাইল্যান্ডজুড়ে পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজধানী ব্যাংককে হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। সম্প্রতি তার জোট সরকার থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল বেরিয়ে যাওয়ায় তার সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতাও হ্রাস পায়, যা তার রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও দুর্বল করে তোলে।
ভবিষ্যৎ কী?
পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি তার কাজ বন্ধ করতে চান না। আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তাকে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
পেতংতার্ন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে সিনাওয়াত্রা পরিবারের দীর্ঘদিনের প্রভাব থাকলেও, বিভিন্ন সময়ে সেনা অভ্যুত্থান ও আদালতের রায়ে তাদের ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে। এই নতুন ঘটনা থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।