বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১৪ সেনা, নেপথ্যে ‘ত্রিভুজ প্রেম’

দক্ষিণ সুদানে একটি ‘ত্রিভুজ প্রেম’কে কেন্দ্র করে সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ১৪ সেনা নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। বুধবার (৮ অক্টোবর) দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সংবাদমাধ্যম টিআরটি বলছে, দক্ষিণ সুদান ও সুদানের সীমান্তবর্তী তেলসমৃদ্ধ আবিয়েই বক্স অঞ্চলের কাছের একটি বাজারে সোমবার ঘটনাটি ঘটে। যেখানে সরকারপন্থি ও বিরোধী যোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত ইউনিফায়েড ভিআইপি প্রোটেকশন ফোর্সের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এমনিতেই দেশটির প্রেসিডেন্ট সালভা কিয়ির ও তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়েক মাচারের মধ্যে হওয়া ভঙ্গুর ক্ষমতা-বণ্টন চুক্তি গত কয়েক মাস ধরে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে, যা দেশটিকে আবারও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এর আগে গৃহযুদ্ধেই ২০১০-এর দশকে প্রায় চার লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।

দক্ষিণ সুদান পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (এসএসপিডিএফ) মুখপাত্র লুল রুয়াই কোয়াং জানান, দুই কর্মকর্তার মধ্যে সোমবারের এই সংঘর্ষ শুরু হয়, যাদের একজন মাচারপন্থি ও অন্যজন কিয়িরপন্থি।

কোয়াং বলেন, ‘সংঘর্ষের কারণ নিয়ে দুটি ভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে। একটি মতে, বিষয়টি ছিল একান্ত ব্যক্তিগত ভুল বোঝাবুঝি, আবার অন্য মতে এটি ছিল একটি ‘ত্রিভুজ প্রেমের’ ফল।’ তার ভাষায়, ‘দুই কর্মকর্তাই একই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এবং এ নিয়েই তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হয়।’

কোয়াং জানান, মাচারপন্থি কর্মকর্তা গুলি চালিয়ে তার কিয়িরপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যা করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যার পরই উভয় পক্ষের দেহরক্ষীরা পালটা গুলি চালায়।

এভাবে বাজার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ দ্রুত চেকপোস্ট ও সেনা ব্যারাকে ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১৪ সেনা। এর মধ্যে ছয়জন এসপিএলএ-আইও (মাচারের দল) এবং আট জন এসএসপিডিএফের।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, দক্ষিণ সুদান আবারও যুদ্ধের প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে, শুধু এ বছরই সেখানে প্রায় দুই হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

দক্ষিণ সুদান ২০১১ সালে সুদান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে, কিন্তু এর অল্প সময় পরই দেশটি পাঁচ বছরব্যাপী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

২০১৮ সালের এক শান্তিচুক্তি সেই যুদ্ধের অবসান ঘটায়, কিন্তু এর পরও দেশটির নেতারা নির্বাচন আয়োজন বা সশস্ত্র বাহিনীকে একীভূত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

Tags :

News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025