আয়ে এক বছরের ব্যবধানে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ২০২৪ পঞ্জিকা বছরের জন্য প্রায় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা আয় এবং ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে দলটি। এই হিসাবে দলটির তহবিলে প্রায় ১১ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় চোখে পড়ার মতো।
রবিবার সকালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গিয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদের কাছে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করে।
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ২০২৪ সালে বিএনপির মোট আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা।
হিসাব অনুযায়ী, গত বছর দলটির তহবিলে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা।
দলটির জমা দেওয়া আগের হিসাবগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে আয়-ব্যয়ে এই বড় পরিবর্তন স্পষ্ট হয়। ২০২৩ সালে বিএনপির আয় ছিল মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ১৫১ টাকা, আর ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৬৫ লাখ ২৩ হাজার ৯৭০ টাকা। অর্থাৎ সে বছর আয়ের চেয়ে ব্যয় ছিল অনেক বেশি। তার আগের বছর, ২০২২ সালে আয় ছিল ৫ কোটি ৯২ লাখ ৪ হাজার ৬৩২ টাকা এবং ব্যয় ছিল ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮০৩ টাকা।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হয়। এই হিসাব একটি নিবন্ধিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের (চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং ফার্ম) মাধ্যমে নিরীক্ষা করানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিধি অনুযায়ী, কোনো দল পরপর তিন বছর কমিশনে তাদের আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দিলে নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
এবার আওয়ামী লীগ (যার নিবন্ধন স্থগিত) ছাড়া নিবন্ধিত ৫০টি রাজনৈতিক দলকে অডিট রিপোর্ট জমা দিতে চিঠি দিয়েছিল ইসি। দলগুলোকে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের হিসাব চলতি মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত ২১টি দল তাদের হিসাব জমা দিয়েছে এবং ২৩টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। তবে নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলেও দলগুলোর আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য এখনও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।