দেশের সর্বোচ্চ নির্বাহী পর্ষদে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত একজন উপদেষ্টার ব্যাগে গুলিভর্তি ম্যাগাজিন উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিছু মিডিয়ার দাবি মোতাবেক গুলিটি ছিল একে-৪৭ রাইফেলের, যদিও আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি এখনো। এই ঘটনা বিমানবন্দর নিরাপত্তার দুর্বলতা এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে, যা সামনে এনেছেন অনুসন্ধানী প্রতিবেদক জুলকারনাইন সায়ের।
উল্লেখ্য, এই সংবাদ বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর কোনো এক অদৃশ্য কারণে বা চাপে পড়ে প্রায় সব গণমাধ্যম সংবাদটি সরিয়ে ফেলতে (ডিলিট) বাধ্য হয়েছে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ব্যাগে ম্যাগাজিন উদ্ধার
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিদেশে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা তল্লাশিতে পড়েন। তার ব্যক্তিগত ব্যাগ থেকে একটি গুলিসহ একটি অস্ত্রের ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। যদিও মূল অস্ত্রটি তার ব্যাগে পাওয়া যায়নি, তবু এই ঘটনাটি অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
অস্ত্রের উৎস ও জিজ্ঞাসাবাদ
অনুসন্ধানী প্রতিবেদক জুলকারনাইন সায়ের তার অনুসন্ধানে এই ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন:
- রাষ্ট্রের ক্যাবিনেটে প্রতিনিধিত্বকারী একজন উপদেষ্টার ব্যাগে কেন অস্ত্রের ম্যাগাজিন থাকবে?
- তিনি কি নিয়মিত অস্ত্র বহন করেন? যদি করেন, তার জন্য নির্ধারিত সরকারি নিরাপত্তা প্রটোকল অনুযায়ী নিরাপত্তা কর্মীরা কেন অস্ত্র বহন করবে না?
- বিদেশে যাত্রার প্রাক্কালে আসিফের ব্যাগে অস্ত্রের ম্যাগাজিন কিভাবে এলো?
- আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স আছে?
- গুলি উদ্ধারের পর তাকে কি কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে?
বিমানবন্দর নিরাপত্তা প্রটোকলের ত্রুটি
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ভিআইপি গেটের প্রথম চেকিংয়ে অপারেটরের উদাসীনতার কারণে ম্যাগাজিনটি প্রাথমিকভাবে ধরা পড়েনি। তবে, বিমানে বোর্ডিংয়ের ঠিক আগের চেক পয়েন্টে গুলিসহ ম্যাগাজিনটি চিহ্নিত হয়। এরপর আসিফের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এসে এটি নিয়ে যান। এই ঘটনা বিমানবন্দরের ভিআইপি নিরাপত্তা প্রটোকলের গুরুতর ত্রুটি নির্দেশ করে।
গণমাধ্যম থেকে সংবাদ গায়েব: স্বাধীনতার প্রশ্ন
সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো, এই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ ইতোমধ্যেই প্রায় সকল গণমাধ্যম থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। জুলকারনাইন সায়ের এই বিষয়টি তুলে ধরে বাংলাদেশ ২.০ তে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যদি প্রকাশিত সংবাদ এভাবে গায়েব করা হয়, তাহলে তিনি ভবিষ্যতে গায়েব হওয়া সংবাদের কেন্দ্রে গিয়ে তা আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে আগ্রহী হবেন।
এই ঘটনাটি সরকারের উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা, দেশের বিমানবন্দর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে একটি স্বচ্ছ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি উঠেছে।