রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০ জন হয়েছে। এ ঘটনায় আহতদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭১ জন।
সোমবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজেআই’ প্রশিক্ষণ বিমানটি সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়।
বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। অনেক দূর থেকেও সেখানে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। এ ঘটনায় বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাইলট নিহত
বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম মারা গেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তৌকিরের পরিবারকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে রাজশাহী থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিকেল ৫টার দিকে রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে তাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পাইলট তৌকিরের মেজ চাচা মতিউর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা কিছুক্ষণ আগে তার মৃত্যুর খবর শুনতে পেয়েছি। বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি হেলিকপ্টার এয়ারপোর্টে পাঠানো হয়েছে। সেই হেলিকপ্টারে করে তৌকিরের বাবা তোহরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন ও ছোট বোন বৃষ্টিকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।’
মতিউর রহমান আরও বলেন, ‘সম্প্রতি তৌকির রাজশাহীতে এসেছিল। ছয় মাস আগে তার বিয়ে হয়।’
কোন হাসপাতালে কতজন ভর্তি?
প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ঢাকার কোন হাসপাতালে কতজনকে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে অথবা মৃতদেহ রয়েছে, তার একটি তালিকা দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর।
তালিকা অনুযায়ী, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আহত আট জন, বার্ন ইনস্টিটিউটে আহত ৭০ জন, সিএমএইচে আহত ১৪ জন, উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল এন্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে ১১ জন, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে আহত ৬০ জন, উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আহত একজন- সর্বমোট ১৬৪ জন আহত অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন।
জরুরি প্রয়োজনে হটলাইন
দুর্ঘটনায় আহতদের তথ্যের জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে একটি জরুরি হটলাইন চালু করা হয়েছে। হটলাইন নম্বরটি হলো : ০১৯৪৯০৪৩৬৯৭।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক
বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় মঙ্গলবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, শোক দিবস উপলক্ষে দেশের সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
এছাড়া, দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের জন্য দেশের সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।