ফ্রান্সে রাজনীতিবিদদের প্রতি ক্ষোভ এবং বাজেটে পরিকল্পিত কাটছাঁটের প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। দেশজুড়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষক, পরিবহন শ্রমিক, চিকিৎসাকর্মী, ফার্মাসিস্ট ও সরকারি কর্মকর্তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। এদিন নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ট্রেড ইউনিয়নগুলো বিরল ঐক্য প্রদর্শন করেছে। ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নেতৃত্বে দেশব্যাপী আড়াইশর মতো বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে, ফিলিপাইনেও আন্দোলন শুরু হয়েছে। সেখানে দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে জনতা। প্রস্তুতি চলছে বড় বিক্ষোভ আয়োজনের।
বৃহস্পতিবারের ধর্মঘটের মধ্যে ফ্রান্সজুড়ে বিক্ষোভ মিছিলে অন্তত আট লাখ ফরাসি অংশ নেন। এটিকে দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধর্মঘট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষা, রেল ও বিমান যোগাযোগও ব্যাহত হয়েছে। এ ঘটনায় সারা দেশে ৮০ হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বিক্ষোভকারীদের অনেকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি পার্লামেন্টে বাজেট নিয়েই এক আস্থা ভোটে তার পছন্দের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুকে পদত্যাগ করতে হয়। ফলে দুই বছরের কম সময়ে পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী বেছে নিতে হয় মাখোঁকে। বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে নড়বড়ে অবস্থানে রয়েছেন তিনি।
এদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সাম্প্রতিক অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ভয়াবহ দুর্ভোগ তৈরি করেছে। এতে শুধু জনজীবন বিপর্যস্তই হয়নি, বরং বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগকেও সামনে অনা হয়েছে।
৩৬ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষিকা ক্রিসা টোলেন্তিনো বহুদিন ধরেই বন্যাকে জীবনের অংশ হিসেবে মেনে নিয়েছেন; কিন্তু এখন তিনি ক্ষুব্ধ। টোলেন্তিনো বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। আমি কঠোর পরিশ্রম করি, অল্প খরচ করি, প্রতি মাসে বেতনের টাকা থেকে কর কেটে নেওয়া হয়। তারপর শুনতে হয়, সেই টাকা দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদরা ভোগ করছেন।’
এ অভিযোগ এখন ফিলিপাইনজুড়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। মানুষ প্রশ্ন তুলছে— কোটি কোটি টাকার সড়ক, সেতু, বাঁধ নির্মাণে খরচ হলেও বন্যা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ কেন? টিকটক, ফেসবুক ও এক্সের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও ঠিকাদাররা ভুয়া প্রকল্প বানিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ অবস্থায় আগামী রবিবার দুর্নীতিবিরোধী একটি বিশাল বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে।