১৬ ডিসেম্বর কিন্তু ভারতেরও বিজয় দিবস, এটা তারাও পালন করে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করে ২৬ মার্চ। সারা পৃথিবীর মিডিয়াতে পরদিন নিউজ প্রকাশিত হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। বিশ্বাস না হলে সেই সময়ের সংবাদপত্র চেক করে দেখতে পারেন।
২৬ মার্চ থেকে চলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। ভারত কিন্তু তখনো সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়নি। পাকিস্তান ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে হামলা করলে ৩ ডিসেম্বর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এর মানে হচ্ছে তখন বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের একযোগে যুদ্ধ চলছে। ৩ ডিসেম্বর ভারত যুদ্ধ শুরু করার পরই আসলে পাকিস্তানের লাল সুতা বের হয়ে যায়।
২৫ বছরের মৈত্রী চুক্তি হয় বাংলাদেশের মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের। এতে বলা হয় একে অপরকে সামরিক সহায়তা দিবে বিপদে পড়লে। ফলে বাংলাদেশ ভারত মিলে “মিত্র বাহিনী” গঠন করে। ভারতের বিমান পাকিস্তানে ঢুকে বোমাবর্ষণ শুরু করে। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের যে কারাগারে বন্দী ছিলেন সেখানে অবিরাম বোমাবর্ষণের শব্দ শোনা যেতো। মুজিব জিজ্ঞেস করেছিলেন, এগুলো কিসের শব্দ। তারা বলত শীতকালীন মহড়ার শব্দ এগুলো। কিন্তু যে গোয়েন্দা ছদ্মবেশে আসামী সেজে মুজিবের রুমে তাঁর জন্য রান্না ও অন্যান্য কাজ করে দিতো সে পরবর্তীতে মিডিয়ায় এক ইন্টারভিউতে বলেছিল যে, মুজিব বুঝতেন যুদ্ধ চলছে আর এগুলো ভারতের বিমানবাহিনীর গোলাবর্ষণ।
যাই হোক, ১৬ ডিসেম্বর নিয়াজী আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছিল ভারতীয় বাহিনীর কাছে কারণ তাতে তারা জেনেভা কনভেনশনের সুবিধা পাবে। বাংলাদেশের কোন স্বীকৃত সেনাবাহিনী ছিল না। ফলে ভারতের ইতিহাসে এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ জয়। এজন্য ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতও ১৬ ডিসেম্বরকে বিজয় দিবস পালন করে। ইতিহাস না জানলে সলিমুল্লাহ কলিমুল্লাহরা আপনাকে বুঝাবে সেদিন আসলে ভারতের বিজয় হয়েছিল।
সেদিন যদি বাংলাদেশের বিজয় না হয়ে একা ভারতের বিজয় হয় তাহলে বাংলাদেশের পুরোটাই তো তাদের রাজ্য করার কথা। কাজেই কমনসেন্স খাটিয়ে ইতিহাস পড়ুন এবং জামাত ও চিঙ্কু বামদের থেকে দূরে থাকুন। আর শুনুন, নরেন্দ্র মোদি ও রাহুল গান্ধী ১৬ ডিসেম্বর তাদের যুদ্ধ জয়ের বিজয় দিবসের পোস্ট দিয়েছেন, বাংলাদেশের নাম কেন নিবে? তারা তো বাংলাদেশের বিজয় দিবস পালন করছে না। কমনসেন্স খাটান!




