ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন-বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বার্তাপ্রধান ডেবোরাহ টারনেস পদত্যাগ করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ভাষণ সম্পাদনা করে দর্শকদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে ‘প্যানোরামা’ তথ্যচিত্র নিয়ে সমালোচনার পর তারা পদত্যাগ করেন।
রবিবার (৯ নভেম্বর) তারা পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে টিম ডেভি বলেন, ‘সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বিবিসিও নিখুঁত নয়। আমাদের সবসময় খোলা, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এটিই একমাত্র কারণ নয়। বিবিসি নিউজকে ঘিরে বর্তমান বিতর্ক আমার সিদ্ধান্তে যুক্তিসঙ্গত ভূমিকা রেখেছে।’
জানা গেছে, পাঁচ বছর ধরে দায়িত্বে থাকা টিম ডেভি একাধিক বিতর্ক ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ছিলেন।
টিম ডেভি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে বিবিসি ভালো কাজ করছে, তবে কিছু ভুল হয়েছে এবং মহাপরিচালক হিসেবে সেই ভুলের চূড়ান্ত দায় আমাকেই নিতে হবে।’
ব্রিটেনের রাজনৈতিক নেতারা এই পদত্যাগের ঘটনায় পরিবর্তনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রাম্প।
রবিবার রাতে এক বিবৃতিতে বিবিসির বার্তাপ্রধান ডেবোরাহ টারনেস বলেন, ‘প্যানোরামা বিতর্ক এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যা বিবিসির ক্ষতি করছে। চূড়ান্ত দায়িত্ব আমারই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনজীবনে নেতাদের সম্পূর্ণভাবে জবাবদিহি করতে হয়, তাই আমি পদত্যাগ করছি। যদিও কিছু ভুল হয়েছে, আমি সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করে বলতে চাই—সম্প্রতি যে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে বিবিসি নিউজ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট, তা সম্পূর্ণ ভুল।’
টারনেস গত তিন বছর ধরে নিউজ অ্যান্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সের প্রধান নির্বাহী (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ ফাঁস হওয়া বিবিসির একটি অভ্যন্তরীণ মেমো প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, প্যানোরামা তথ্যচিত্রে ট্রাম্পের বক্তৃতার দুটি অংশ সম্পাদনা করে এমনভাবে একত্রিত করা হয়েছে, যাতে মনে হয় তিনি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গা উসকে দিয়েছেন।
সম্পাদনার পর ট্রাম্পের বক্তব্য দাঁড়ায়, ‘আমরা ক্যাপিটলের দিকে যাচ্ছি এবং আমি সেখানে আপনাদের সঙ্গে থাকব এবং আমরা লড়াই করব। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করব।’
ট্রাম্পের ভাষণে এ কথাগুলো থাকলেও সেগুলোর মধ্যে আরও অনেক কথা ছিল। তার বক্তব্যের অংশবিশেষ এভাবে জোড়া লাগানোর বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর বিবিসির সমালোচনায় সোচ্চার হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। তিনি বিবিসিকে ‘১০০ শতাংশ ভুয়া খবর’ এবং একটি ‘অপপ্রচারের যন্ত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
এছাড়া বিবিসির বিরুদ্ধে গাজা ও ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের মতো বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে ‘গুরুতর ও সামগ্রিক পদ্ধতিগত’ পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে।




