দীর্ঘ বিরতির পর ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ফেরা আন্তর্জাতিক ম্যাচে দারুণ এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে ম্যাচ শেষে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে একটাই নাম- হামজা চৌধুরী। মাঠে অভিষেকেই গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া এই প্রবাসী মিডফিল্ডারকে নিয়ে এতটাই মুগ্ধ ভুটানের কোচ আৎসুশি নাকামুরা সংবাদ সম্মেলনের প্রায় পুরোটা সময়জুড়েই কথা বলেছেন তাকে ঘিরে।
বুধবার (৪ জুন) সাংবাদিকদের প্রথম প্রশ্নেই জাপানি এই কোচ অকপটে স্বীকার করলেন, ‘হামজাই দুই দলের মধ্যে মূল পার্থক্য তৈরি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘গোল তো করেছে-ই, তবে শুধু গোল নয় হামজার মাঠে উপস্থিতি, বল পায়ে কিংবা বল ছাড়া- সব জায়গায় সে দারুণ ছিল। আমরা বল পজিশনে যেতে পারিনি, কারণ হামজার মতো একজন মিডফিল্ডার আমাদের বারবার থামিয়ে দিয়েছে।’
গত বছর সেপ্টেম্বরে এই ভুটান দলই ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে হারিয়েছিল। এবার ঢাকায় এসে ঠিক উল্টো অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের। সেই প্রসঙ্গেই নাকামুরা বলেন, ‘খুব কঠিন ম্যাচ ছিল। বাংলাদেশের বিল্ডআপ প্লে, পাসিং- সবকিছু আগের চেয়ে অনেক উন্নত। এমন বাংলাদেশ আমরা আগে দেখিনি।’
হামজা-ফাহামিদুলের মতো নতুনদের আগমনে বাংলাদেশের মাঝমাঠে এক নতুন ভারসাম্য এসেছে। সেই প্রশংসাও করেছেন ভুটান কোচ, ‘এক বছরের ব্যবধানে মাঝমাঠে বাংলাদেশ অনেক বদলেছে। পাসিং, পজিশনিং সবখানে উন্নতি চোখে পড়েছে। জামাল ভূঁয়াও আজ সামনে উঠে আক্রমণে যুক্ত হচ্ছিলেন, এটা তাদের কৌশলে বৈচিত্র্য এনেছে। সবমিলিয়ে হামজার অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের খেলার ধরনই পাল্টে দিয়েছে।’
শুধু খেলোয়াড় নয়, নাকামুরা মুগ্ধ হয়েছেন ঢাকার ফুটবল-দর্শকদের নিয়েও। দীর্ঘদিন পর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ফুটবল। গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া দর্শক। সেটিই যেন আরও চাপে ফেলেছিল ভুটান দলকে।
তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণত খুব জোরে কথা বলি, কিন্তু আজকে মাঠে সেই সুযোগ পাইনি। দর্শকদের সাড়া-চিৎকারে কিছু বলাই যাচ্ছিল না। তবে এটা প্রতিপক্ষের মাঠে খেলারই অংশ। বাংলাদেশের দর্শকরা আজ অসাধারণ ছিল।’
মাঠের ভেতরে হামজা চৌধুরীর একচ্ছত্র আধিপত্য, আর গ্যালারিতে দর্শকদের উন্মাদনা- সব মিলিয়ে ঢাকার স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ফুটবলের প্রত্যাবর্তন হয়েছে এক জমজমাট আয়োজনে। আর সেই মঞ্চেই বিদেশি কোচের কণ্ঠে হামজা ও বাংলাদেশের এমন প্রশংসা নিঃসন্দেহে লাল-সবুজের ফুটবলের জন্য এক বড় বার্তা।