আফগান সীমান্তে সংঘর্ষ: পাকিস্তানি পাঁচ সেনাসহ নিহত ৩০

আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে সংঘর্ষে পাঁচ পাকিস্তানি সেনা ও ২৫ জন সশস্ত্র যোদ্ধা নিহত হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘর্ষের পর উত্তেজনা প্রশমনের উভয় দেশের প্রতিনিধিরা তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই দিনব্যাপী বৈঠক করছেন। এরই মধ্যে রবিবার (২৬ অক্টোবর) নতুন করে রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষের খবর এলো।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখার এক বিবৃতিতে বলছে, শুক্রবার ও শনিবার সশস্ত্র যোদ্ধারা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকা কুররাম এবং উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিল।

রয়টার্স জানিয়েছে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের প্রধান মুখপাত্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।

তালেবান সরকার সশস্ত্র যোদ্ধাদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে। তারা বলে, পাকিস্তানের সামরিক অভিযান আফগান সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।

চলতি মাসের শুরুতে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর সংঘাতের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে উভয় দেশের কর্মকর্তারা বর্তমানে ইস্তাম্বুলে রয়েছেন। ২০২১ সালে তালেবানদের কাবুল দখলের পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত সংঘাত।

২০২১ সালে তালেবানরা আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে পাকিস্তানে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে সীমান্তসন্ত্রাস ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশজুড়ে মোট সহিংসতার ৯৬ শতাংশেরও বেশি এই দুটি প্রদেশেই ঘটে।

পাকিস্তানের একটি পুলিশ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসে খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৬০০টিরও বেশি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে এই ধরনের ঘটনায় কমপক্ষে ১৩৮ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ৭৯ জন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, আফগান অভয়ারণ্য থেকে পরিচালিত এসব হামলা চালানো যোদ্ধাদের ওপর তালেবানদের লাগাম টানার দাবি জানিয়েছিল পাকিস্তান। এরপর দুই প্রতিবেশীর সামরিক লড়াই শুরু হয়। বিশেষ করে সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি এবং পাকিস্তানি বিমান হামলা।

এর আগে গত সপ্তাহে দোহায় প্রথম দফা আলোচনায় উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছে।

এরই মধ্যে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ গতকাল শনিবার বলেন, যুদ্ধবিরতি বহাল আছে। তিনি বিশ্বাস করেন, আফগানিস্তান শান্তি চায়। তবে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ইস্তাম্বুলে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থতার মানে হবে ‘খোলা যুদ্ধ’।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী শুক্রবার ও শনিবারের হামলাকারীদের ‘ফিতনা আল খোয়ারিজ’-এর সদস্য হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা এই সংগঠনের সঙ্গে বিদেশি পৃষ্ঠপোষকতা ও সমর্থনের অভিযোগ করে আসছে।

Tags :

International News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025