পাল্টা হামলায় ২০০ আফগান যোদ্ধাকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের

শনিবার রাত থেকে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে তীব্র গোলাগুলির ধারাবাহিকতায় ২০০ জনেরও বেশি তালেবান যোদ্ধা ও সহযোগীকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।

রবিবার (১২ অক্টোবর) পাকিস্তানের আইএসপিআর বলেছে, তালেবান বাহিনী এবং ভারত-সমর্থিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর রাতভর বিনা উস্কানিতে হামলার জবাবে আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপে পাকিস্তানি বাহিনী ২০০ জনেরও বেশি আফগান তালেবান এবং তার সহযোগী সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, পাকিস্তানি বাহিনী ‘তালেবান শিবির এবং পোস্ট, সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং আফগান ভূখণ্ড থেকে পরিচালিত সহায়তা নেটওয়ার্কগুলোর বিরুদ্ধে নির্ভুল গুলিবর্ষণ এবং হামলা চালিয়েছে, পাশাপাশি শারীরিক অভিযানও চালিয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘সীমান্তজুড়ে একাধিক তালেবান অবস্থান ধ্বংস করা হয়েছে; সীমান্তের আফগান দিকে ২১টি প্রতিকূল অবস্থানও সাময়িকভাবে দখল করা হয়েছে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও সহায়তা করার জন্য ব্যবহৃত একাধিক সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে, দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার কারণে সৌদি আরব, কাতার এবং ইরান প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তিনটি দেশই সংযম বজায় রাখার এবং সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উত্তেজনা হ্রাস অপরিহার্য।’ এতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের জনগণের নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্যও প্রার্থনা করা হয়েছে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং শান্ত, সংলাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মতপার্থক্য সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘর্ষের বিষয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন এবং উত্তেজনা নিরসনে উভয় পক্ষকে জরুরি আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন। বাকাই বলেন, ‘প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে ইরান সাহায্য করতে প্রস্তুত।’

গত বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের সীমান্তের ভেতরে একটি বাজারে বোমা হামলা চালিয়ে ‘সন্ত্রাসীদের’ হত্যার দাবি করে পাকিস্তান। এরপর থেকে উভয় দেশ একে অপরের সেনাদের হত্যার দাবি করে আসছে।

তালেবান সরকার রোববার দাবি করেছে, তারা পাকিস্তানের মোট ৫৮ জন সেনাকে হত্যা করেছে। সরকারের প্রধান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আফগান বাহিনী পাকিস্তানের ২৫টি ঘাঁটিও দখল করেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে পাকিস্তানে ৯০% সন্ত্রাসী হামলা ঘটেছে আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান প্রদেশে। বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী পশতুন এবং বালুচসহ জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার অজুহাতে উভয় অঞ্চলে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ চালায়। বেশিরভাগ হামলার পেছনে তালেবান জড়িত বলে দাবি ইসলামাবাদের।

Tags :

International News Desk

Most Discussed

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More on this topic

    People’s Agenda

Copyrights are reserved by NE News © 2025